সাম্প্রতিক

দুনিয়া কাঁপানো ৬ সিক্রেট এজেন্সি

সাম্প্রতিক বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০১৯ ০১:৫২:৩৫

বর্তমান বিশ্বে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এক আধুনিক সংস্করণ হচ্ছে রাষ্ট্রের গোপন গোয়েন্দা সংস্থাদের অস্তিত্ব। প্রতিটি দেশ নিজেরা আদতে গোপনে কিন্তু এক অর্থে প্রকাশ্যে গড়ে তুলেছে চৌকস সব গোপন সংগঠন৷ সামরিক বিভাগের আওতায় এসব সিক্রেট এজেন্সি দেশে ও দেশের বাইরে নিজেদের কাজ পরিচালনা করে থাকে যা খুব গোপনীয়তার সাথে সম্পাদন করা হয়। হালের মোসাদ, সি আই এ, র' কিংবা আইএসআই নামগুলো শুনলেই পাঠকের মনে স্পষ্ট ফুটে উঠবে এসব সিক্রেট এজেন্সিদের রকমফের। সারা দুনিয়ায় সাড়া জাগানো এমন কিছু সিক্রেট এজেন্সিই আজকের আলোচনার বিষয়।

CIA (Usa)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী এবং সবচেয়ে দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার নাম সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। ধারণা করা হয় পৃথিবীর সবকটি দেশে সিআইএ'র গোয়েন্দারা  আঁড়ি পেতে আছে। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া এই সংস্থা মূলত আন্তর্জাতিক গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে সি আই এ অনেক কুখ্যাত কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি অনেক যুদ্ধ সংঘটনের পেছনেও আমেরিকান এই সিক্রেট এজেন্সির সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে এই সংস্থা বিশেষভাবে কাজ করে থাকে।

মোসাদ (ইসরায়েল)

ইসরায়েল রাষ্ট্রটির নাম নিলেই অবধারিতভাবে চলে আসবে দেশটির প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের নাম। ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠা পায় পুরো বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করা এই সিক্রেট এজেন্সি। এই গ্রুপটি দেশে বিদেশে প্রচুর গুপ্তহত্যার কাজে জড়িত। বিভিন্ন সময়ে সুকৌশলে ভিনদেশে গিয়ে শিকারকে হত্যা করতে ওস্তাদ মোসাদের গোয়েন্দারা। কখনো বিষপান করিয়ে, কখনো আকস্মিক গুলি কখনোবা নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে গুপ্তহত্যা করে থাকে তারা। গত বছরের এপ্রিলে ফিলিস্তিনের রকেট বিজ্ঞানী ও হামাসের সদস্য মোহাম্মদ আল বাতাশকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মোসাদের গোয়েন্দারা গুলি করে হত্যা করে৷ এভাবে দেশে দেশে মোসাদ অভিনব কায়দায় নিজেদের মিশন পরিচালনা করে থাকে।

Ministry of state security, Mss (China)

১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া Ministry of state security  চীনের বিখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা। রাজধানী বেইজিং এ এর সদর দপ্তর অবস্থিত। একটি কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বিভাগ এবং সোশ্যাল রিসার্চ বিভাগ সহ এর ১৭ টি বিভাগ রয়েছে। Mss চীনের অভ্যন্তরের ইন্টারনেটের উপর নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধহস্ত। বাইরের পৃথিবীর মানুষ যাতে চীনা জনগণের উপর প্রভাব না ফেলতে পারে সেজন্য ইন্টারনেটের উপর দ্বারা গুপ্তচরবৃত্তি চালায়। এছাড়া অনলাইনে সম্ভাব্য বিদ্রোহী আচরণ এবং ভিন্নমত দমনেও এই গ্রুপের সদস্যরা গোপনে কাজ করে থাকে। Mss এর সদস্যরা ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক খাতে গুপ্তচরবৃত্তি করে থাকে। আর এজন্য চীনা টেক জায়ান্ট হুয়াওয়ে তাদের কাছে গ্রাহকদের তথ্য পাচার করে বলেও অভিযোগ আছে। প্রায় এক লাখ Mss সদস্য চীন এবং চীনের বাইরে চীনের নিরাপত্তার ব্রত নিয়ে সজাগ দৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে।

Research and analysis wing, Raw(India)

প্রতিবেশী দেশসমূহের অভ্যন্তরে ভারতের এই গোয়েন্দা সংস্থার ব্যাপক প্রভাব বলে সন্দেহ করা হয়। ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠা পাওয়া র' ভারতের অভ্যন্তরে কাজ চালানোর পাশাপাশি বাইরের দেশের সরকার ও প্রতিষ্ঠান বিষয়েও তথ্যাদি নিয়ে থাকে। ভারতের পার্লামেন্টের কাছে দায়বদ্ধ না থাকলেও  র' প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়বদ্ধ।

Australian secret intelligence service (Asis)

অস্ট্রেলিয়ান এই সিক্রেট এজেন্সি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এর অস্তিত্ব নিয়ে অন্ধকারেই ছিল সবাই। ১৯৭২ সালে অস্ট্রেলিয়ান ট্যাবলয়েড দ্য টেলিগ্রাফ তাদের এক প্রতিবেদনে সবার কাছে এই এজেন্সিকে মেলে ধরে। এই সংস্থা মূলত আন্তর্জাতিক ইন্টেলিজেন্সিতে নিজেদেরকে ব্যস্ত রাখে। অন্যান্য সব ইন্টেলিজেন্স এর মত Asis এরও বেশকিছু উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে। তিন দশক আগে পাপুয়া নিউগিনির স্বাধীনতা সংগ্রামে Asis এর সদস্যরা ব্যাপকভাবে  বাধা দিয়েছিল।

Canadian security intelligence service (Csis)

পৃথিবীর নিরাপদ দেশগুলোর একটি তালিকা করলে অবধারিতভাবে কানাডার নাম আসবে৷ আর কানাডার নিরাপত্তার অতন্দ্র এক প্রহরী এই CSIS. কানাডার জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে জড়িত সকল কাজই এই সংস্থার সদস্যরা সম্পন্ন করে থাকে। অটোয়া এবং ওন্টেরিও ভিত্তিক এই গোয়েন্দা সংস্থা পুরো বিশ্ব থেকে কানাডা এবং কানাডিয়ান নাগরিকের জন্য হুমকি হতে পারে এমন তথ্য সংগ্রহ করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড নিয়ে গঠিত ফাইভ আইস খ্যাত ইন্টেলিজেন্স জোট এর গর্বিত সদস্য  CSIS.

তথ্যসূত্রঃ  https://improb.com/best-intelligence-agencies-in-the-world/

লেখকঃ উবায়দুর রহমান রাজু