সাম্প্রতিক

নরকের দরজাঃ তুর্কমেনিস্থান

সাম্প্রতিক রবিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১১:৫০

এমন একটা জায়গার কথা চিন্তা করুন তো, যেখানে এক বিশাল গোলাকার গর্তের ভেতরে সব সময় আগুন জ্বলছে। আর এই বৈশিষ্ট্যের কারণে এই জায়গার নাম দেওয়া হয়েছে নরকের দরজা। নরকের দরজাটি অবস্থিত তুর্কমেনিস্থানের কারাকুম মরুভূমির দারওয়েজা নামের এক গ্রামের কাছে। নরকের দরজাটি ভয়ঙ্কর সুন্দর লাগে রাতে। তখন অনেক দূর থেকেই জায়গাটা তো দেখা যায়ই, এর শিখার উজ্জ্বলতাও ভালোমতো বুঝা যায়। সেখানকার উত্তাপ এত বেশি যে, কেউ চাইলেও ৫ মিনিটের বেশি সেখানে থাকতে পারবেন না। দরজাটি কীভাবে তৈরি হলো, তা নিয়ে অবশ্য মতভেদ আছে। কেউ কেউ বলে, এটা একেবারেই প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে। আবার অনেকের মতে, এটা তৈরির পেছনে মানুষের কিঞ্চিত্ হাতও আছে।


সেটা অবশ্য বেশিদিন আগের কথা নয়। ১৯৭১ সাল, তখনো তুর্কমেনিস্তান সোভিয়েত রাশিয়ার থেকে আলাদা হয়নি। একদিন সোভিয়েত রাশিয়ার একদল অনুসন্ধানকারী প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান করতে করতে দারওয়েজা এসে পৌঁছুল। তারা প্রাকৃতিক গ্যাসের খোঁজ পেয়ে নরকের দরজার জায়গাটা খুঁড়ল। আর ছাদ খোঁড়া শেষ হলেই দেখে ভেতরে প্রায় ২৫ মিটার গভীর গর্ত। আর গোলাকার গর্তের ব্যাস প্রায় ৬০-৭০ মিটার। আর তা থেকে অনবরত উঠছে গ্যাস। পরে তারা বুঝল, গ্যাস কেবল ওই গর্তে আটকে ছিল না, গ্যাস আসছে আরও গভীর কোনো উত্স থেকে। আর তখন কি মনে করে কে জানে, আশপাশের বসতির মানুষগুলোর কথা চিন্তা না করে তারা গ্যাসে আগুন ধরিয়ে দিলো। আর তখন থেকেই নরকের দরজায় অনবরত আগুন জ্বলছে।


আরেকটি মতামত অনুসারে,১৯৭১ সাল থেকে জায়গাটি অবিরত দাউ দাউ করে জ্বলছে। ১৯৭১ সালে এখানে গ্যাস খনির সন্ধান মেলে। প্রাথমিকভাবে গবেষনা করে বিষাক্ত গ্যাসের ব্যাপারে গবেষকরা নিশ্চিত হন যার পরিমান ছিল সীমিত। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, এই গ্যাস জ্বালিয়ে শেষ করা হবে ফলে এর বিষাক্ততা ছড়ানোর সুযোগ পাবে না। এরপর এখানে গর্ত করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু গবেষকদের অবাক করে দিয়ে তা এখনও অর্থাৎ ৪০ বছর ধরে একাধারে জ্বলছে। অথচ গবেষকরা নিশ্চিত ছিলেন যে, অল্প কয়েকদিন মধ্যে এই গ্যাস শেষ হবে এবং আগুন নিভে যাবে।