
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ'র ব্যাংকে দেনা এবং নবাব এস্টেট কোর্ট অব ওয়ার্ডস ভুক্তি
ঢাকা নবাব বংশের প্রতিষ্ঠাতা জমিদার আলিমউল্লাহ অত্যন্ত বিচক্ষণ ও সুদূর প্রসারি জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। জমিদারি স্বত্ব নিয়ে ভবিষ্যতে পারিবারিক কোন্দল হতে পারে, সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তিনি তাঁর জমিদারি ওয়াকফ সম্পত্তিতে রূপান্তরিত করেন। জমিদার পরিবারের জ্যেষ্ঠ সন্তান হিসেবে খাজা আব্দুল গণি মোতাওয়াল্লির দায়িত্ব লাভ করেন। খাজা আলিমউল্লাহর চাচা হাফিজউল্লাহর কোন জীবিত পুত্র সন্তান না থাকায় তিনি তার জমিদারিও নিজের জমিদারির সাথে সংযুক্ত করেছিলেন। খাজা আব্দুল গণি পিতার মতই জমিদারির প্রসার লাভে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তাঁর সুনিপুণ ব্যবস্থাপনা ও দক্ষ তত্ত্বাবধানে জমিদারির পরিধি আরও বিস্তৃতি লাভ করে। খাজা আব্দুল গণির সময়ে জমিদারির ব্যাপক বিস্তৃতি ও প্রসার ঘটায় তা পূর্ববঙ্গে সর্ব বৃহৎ জমিদারিতে পরিণত হয়।
নবাব এস্টেটের ১৯০৪ সালের একটি হিসেবে দেখা যায়, ঐ বছর জমিদারির আয় হতে সরকারকে ৩,২০,৯৬৪/- টাকা খাজনা প্রদানের পর এবং জমিদারির সকল খরচ বাদে নীট আয়ের পরিমাণ ছিল ৫,৮০,৮৫৭/- টাকা। খাজা আব্দুল গণির জ্যেষ্ঠ পুত্র খাজা আহসান উল্লাহ অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও ধীর স্থির প্রকৃতির লোক ছিলেন । পুত্র আহসান উল্লাহর যোগ্যতা দেখে পিতা খাজা আব্দুল গণি ১৮৬৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তাঁর উপর জমিদারি পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব ভার অর্পণ করেন। ঢাকা গোবিন্দপুর পরগণা ক্রয় করে খাজা আহসান উল্লাহ তাঁর জমিদারি কিছুটা বৃদ্ধি করেন। পিতার সাথে তাঁর খুবই হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। পিতার পরামর্শ ব্যতীত খাজা আহসান উল্লাহ কোন কাজ করতেন না। পিতার দানশীলতা ও আতিথেয়তার ঐতিহ্য তিনি সমুন্নত রেখেছিলেন। তিনি সেযুগে মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য অকাতরে ৫০ লক্ষ টাকার অধিক দান করেছিলেন।
তৈফুর সাহেবের মতে ঢাকা অঞ্চলের এমন কোন দরগাহ কিংবা জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে নবাব আহসান উল্লাহর দানের ছোঁয়া লাগেনি। তাঁর সময়ে নবাব এস্টেট থেকে হিসাব রেখে যে দান করা হয়েছিল তার তালিকা হতে ৪৮,৫৬,০৫০/- টাকা দান করার কথা জানা যায়। উক্ত দানের তালিকা প্রস্ত্ততকারী চিফ ম্যানেজারের বক্তব্য থেকে জানা যায়, নবাব সাহেব ব্যক্তিগতভাবে প্রচুর অর্থ দান করতেন, যার কোন হিসাব রাখা হতো না। এছাড়া ঋণ গৃহীতাদের আবেদনেও তিনি বিপুল টাকা মাফ করে দিতেন। খাজা আহসান উল্লাহর সময়ে এ পরিবারের জমিদারির ব্যাপক বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যায়।
খাজা আহসান উল্লাহর জ্যেষ্ঠ পুত্র খাজা হাফিজ উল্লাহর ১৮৮৮ সালে অকাল মৃত্যু হয়। তাঁর দ্বিতীয় পুত্র খাজা সলিমুল্লাহ জীবিত পুত্রগণের মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুত্র হিসেবে পরিগণিত হন। ১৮৯৩ সালে নিজ বিবাহ নিয়ে পিতার সাথে মতবিরোধের কারণে তিনি গৃহ ত্যাগ করেন এবং ময়মনসিংহের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকুরি নেন। ১৯০১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পিতা নবাব আহসান উল্লাহর মৃত্যুর খবর তারযোগে পেয়ে খাজা সলিমুল্লাহ পরদিন বিশেষ ট্রেনে ঢাকায় উপস্থিত হন এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র হিসেবে নবাব উপাধিতে ভূষিত হন। ঐদিনই আহসান মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত খাজা পরিবারের লোকদের এক সভায় তিনি সর্বসম্মতিক্রমে পরিবারের অ্যাজমালি সম্পত্তির মোতাওয়াল্লি হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। খাজা সলিমুল্লাহ পিতার ন্যায় দানশীল ছিলেন। জনহিতকর কাজের জন্য মুক্ত হস্তে ব্যয় করতেন। তিনি ছিলেন উপমহাদেশের মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত।
বঙ্গবিভাগের প্রতি জনসমর্থন আদায়ের জন্য ভাইস রয় লর্ড কার্জন ১৯০৪ সালে পূর্ব বঙ্গ সফরে এসে ১৯-১৯ ফেব্রুয়ারি নবাব স্যার সলিমুল্লাহর আতিথ্য গ্রহণ করেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার নবাব বাড়ির প্রাঙ্গণে সামিয়ানা টানিয়ে ভাইস রয়কে সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠিত সভায় বঙ্গবিভাগের সুফল সম্পর্কে বড়লাট ভাষণ দান করেন। এসব সভা অনুষ্ঠানের ও আপ্যায়নের খরচ বহন করতেন নবাব স্যার সলিমুল্লাহ। ১৯০৬ সালের ২৭, ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার শাহবাগে অল ইন্ডিয়া মোহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্সের ২০তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি শরফুদ্দিন। সারা ভারতবর্ষ থেকে সহস্রাধিক মুসলিম নেতৃবৃন্দ এবং সুধি এ সম্মেলনে যোগদান করেন। তিন দিন ব্যাপি এই সম্মেলনের অপ্যায়ন থেকে সকল ব্যয়ভার বহন করেন খাজা সলিমুল্লাহ। এ সম্মেলন বাবদ ছয় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছিল।
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ বিভিন্ন জনহিতকর ও জনকল্যাণমূলক কাজ এবং রাজনীতির পিছনে ১৯০৭ সাল নাগাদ প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন। শেষের দিকে স্ত্রীদের গহনা পর্যন্ত বন্ধক রেখে ও বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করতেন। খরচ কুলাতে না পেরে ১৯০৭ সালের মধ্যে মাড়োওয়ারি ও হিন্দু মহাজনদের নিকট হতে নবাব এস্টেট বন্ধক রেখে ১৪ লক্ষ টাকার ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। এক পর্যায়ে ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে রাজা শ্রীনাথ রায়গং (Raja Sreenath Ray) এবং রাজা সিরমাথ রায় (Raja Sirmath Ray) ঢাকার প্রথম সাব জজ আদালতে যথাক্রমে ১২ এবং ১৬ নং বন্ধকী মামলা রুজু করেন (ইনডেনচারে বর্ণিত অনুচ্ছেদ-২). উক্ত মামলা দুটিতে বাদি পক্ষের অনুকূলে ডিক্রি জারি হয়। ফলে নবাব পরিবারের সকল সম্পত্তি তাদের অনুকূলে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়।
এই আর্থিক দৈন্যদশার সময়ে ইংরেজ সরকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহর সাহায্যে এগিয়ে আসেন। ভারত সরকারের পক্ষে তদানীন্তন Secretary of State of India উভয় মামলার ঋণ গ্রহীতা নবাব খাজা সলিমুল্লাহ এবং ডিক্রি হোল্ডারদের সংগে একটি রেজিস্টার্ড দলিল সম্পাদন করেন এবং উল্লেখিত দুটি ডিক্রির বিপরীতে সমূদয় অর্থ পরিশোধ করে ডিক্রি দুটি ক্রয় করে নেন। সম্পাদিত দলিলের মাধ্যমে ঋণ গ্রহীতা নবাব সলিমুল্লাহ এবং ডিক্রি হোল্ডারদয় বন্ধকী মামলায় উল্লেখিত সমুদয় সম্পত্তি থেকে তাদের অধিকার ও স্বত্ব ত্যাগ করেন।
এসময়ে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ আর্থিক ঋণ গ্রস্থতা ও এস্টেটের সম্পত্তির বিশাল অংশ বন্ধকী মামলায় ডিক্রি হয়ে যাওয়ার কারণে জমিদারি পরিচালনায় তাঁর ব্যর্থতার কথা জানিয়ে ১৮৭৯ সালের কোর্ট অব ওয়ার্ডস আইনের ৬(ই) ধারা মোতাবেক নিজেকে অযোগ্য ঘোষণার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট একটি আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার ১৯০৭ সালের ২২ এপ্রিল ৬৮৬নং পত্রের মাধ্যমে পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশের স্থানীয় সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ প্রদান করে। উক্ত নির্দেশ অনুযায়ী তদানীন্তন পূর্ব বাংলা ও আসাম সরকার (The Government of Eastern Bengal and Asam) ১৯০৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জারিকৃত ৪২৮ নং পত্রের মাধ্যমে নবাব স্যার আহসান উল্লাহর পুত্র নবাব খাজা সলিমুল্লাহ বাহাদুরকে Court of Wards Act 1879 (As Amended by Bengal Act X of 1892 and EB and Asam Act of 1907) এর ৬(ই) ধারা বলে Disqualified ঘোষণা করেন এবং ঢাকা নবাব এস্টেটের সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি কোর্ট অব ওয়ার্ডস দ্বারা পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এতদসংক্রান্ত পূর্ব বাংলা ও আসাম সরকারের “Board of Revenue Eastern Bengal and Asam” এর সেক্রেটারি এফ.পি.ডিকশন পূর্ববঙ্গ আসাম সরকারের ১৯০৭ সালের ১০ আগষ্ট তারিখের গেজেটে একটি নোটিশ জারি করেন। উক্ত নোটিশটি ছিল নিম্নরূপঃ
THE GOVERNMENT OF EASTERN BENGAL AND ASAM GAZETTE, AUGUST 10, 1907 (পূর্ববঙ্গ এন্ড আসাম গেজেট ১০ইং আগষ্ট, ১৯০৭) এ প্রকাশিত নোটিশ নিম্নরূপঃ
“BOARD OF REVENUE EASTERN BENGAL AND ASSAM”
বোর্ড অব রেভিনিউ পূর্ববঙ্গ ও আসাম
অনারেবল এইচ, সেভেন, সি.এস.আই
ভারপ্রাপ্ত মেম্বর
নোটিশ
যেহেতু পূর্ববঙ্গ ও আসাম গভর্ণমেন্টের ১৯০৭ সালের ২১ জুলাই তারিখের ২৭৫সি, নম্বরের পত্রের লিখিত আদেশ অনুসারে, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার ১৮৭৯ সালের ৯ আইনের ৬(ঙ) ধারামতে কোর্ট আব ওয়ার্ডস ঢাকা নিবাসী অনারেবল নবাব খাজে ছলিম উল্লাহ বাহাদুর সি.এস.আই মহোদয়কে, তাহার নিজ দরখাস্ত অনুবলে, তিনি ভূতপূর্ব নবাব বাহাদুর স্যার খাজে আছানুল্ল্যা কে.সি..আই.ই মহোদয় হইতে যে সমস্ত স্থাবর সম্পত্তি ওয়ারিসি সূত্রে প্রাপ্ত হইয়াছেন সেই সমস্ত সম্পত্তির সম্বন্ধে অযোগ্য ভূম্যধিকারী স্থির করতঃ তাহার ঐ সকল সম্পত্তির ও অপর যে স্থাবর সম্পত্তি তিনি ম্যানেজারের হস্তে শাসন সংরক্ষণের জন্য প্রদান করেন তাহার রক্ষণাবেক্ষণের ভার গ্রহণ করিয়াছেন, সেমতে উক্ত আইনের পরিবর্তিত সংস্করণ পূর্ববঙ্গ ও আসামের ১৯০৭ সালের ৩ আইনের ১০ক ধারার (১) প্রকরণের বিধান অনুসারে এতদ্বারা সর্ব সাধারণকে জ্ঞাত করা যাইতেছে যে, উক্ত অসমর্থ স্বত্ত্বাধিকারীর কিংবা তাহার স্থাবর সম্পত্তির উপর যে সকল উত্তমর্ণের দাবি আছে তাহারা এই নোটিশের তারিখ অবধি ছয় মাসের মধ্যে আপন প্রাপ্যের লিখিত হিসাব ঢাকা রেভিনিউ বোর্ড অফিসে কোর্ট অব ওয়ার্ডসের বরাবরে দাখিল করিবেন।
উপরোক্ত সময়ের মধ্যে যে সমস্ত দাবি উক্তরূপে রেজিস্ট্রারী না করা হইবে তাহা পরিশোধ করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রেভিনিউ বোর্ডের আদেশ অনুসারে।
এফ.পি.ডিকশন
সেক্রেটারী
এই নোটিশে দেখা যায় নবাব স্যার সলিমুল্লাহ দরখাস্ত বলে তিনি তাঁর পিতা নবাব স্যার খাজা আহসান উল্লাহ হতে যেসমস্ত স্থাবর সম্পত্তি ওয়ারিসি সূত্রে প্রাপ্য হয়েছিলেন সেসমস্ত সম্পত্তি সম্বন্ধে অযোগ্য ভূম্যধিকারী স্থির করতঃ তাঁর ঐ সকল সম্পত্তি ও অপর যে স্থাবর সম্পত্তি তিনি ম্যানেজারের হস্তে শাসন সংরক্ষণের জন্য প্রদান করেন তা কোর্ট অব ওয়ার্ডস আইনের পরিবর্তিত সংস্করণ পূর্ববঙ্গ ও আসামের ১৯০৭ সালে ৩নং আইনে ১০(ক)(১) ধারার বিধান অনুসারে কারো কোন দাবি থাকলে নোটিশ জারির ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা বোর্ড অব রেভিনিউ অফিসে কোর্ট অব ওয়ার্ডস বরাবরে আপত্তি দাখিলের জন্য বলা হয়। উক্ত নোটিশ জারির পরে যেসমস্ত আপত্তি দাখিল হয়েছিল তার নিষ্পত্তি শেষে ঢাকা নবাব এস্টেটকে কোর্ট অব ওয়ার্ডস পরিচালনার নিমিত্ত নিয়ন্ত্রণাধীনে আনায়ন করে।
ঢাকা নবাব এস্টেট কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর নিয়ন্ত্রণাধীনে আসার পূর্বে Secretary of State of India এর সম্মতিক্রমে নবাব সলিমুল্লাহ তাঁর বিভিন্ন ঋণ পরিশোধের জন্য কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর নিকট হতে ১৪,০০,০০০/- (চৌদ্দ লক্ষ) রুপি বা টাকা ঋণ বাবদ গ্রহণ করেন এবং ১৯০৮ সালে ৬ আগষ্ট ৪,১৪২ নম্বর রেজিস্টার্ড Indenture বলে তাঁর সমূদয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নয়টি শর্তে কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর অনুকূলে বন্ধক রাখেন। উক্ত Indenture এ Court of Wards এর পক্ষে প্রথম পক্ষ হিসেবে ঢাকা বিভাগের তদানীন্তন বিভাগীয় কমিশনার জনাব আর. নাথান, আই.সি.এস, দ্বিতীয় পক্ষ নবাব স্যার সলিমুল্লাহর পক্ষে তাঁর এটর্ণি জনাব জে হোডিং এবং তৃতীয় পক্ষ Secretary of State of India এর পক্ষে ঢাকার কালেক্টর জনাব এইচ.এল.সাল কেল্ড স্বাক্ষর করেন। পূর্ববঙ্গ ও আসাম সরকারের উক্তরূপ গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং সম্পাদিত Indenture এর শর্তাধীনে ১৯০৮ সাল হতে ঢাকার নবাব এস্টেটটি সম্পূর্ণটাই বোর্ড অব রেভিনিউ এর নিয়ন্ত্রণাধীন কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর সরকারি তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনায় চলে যায়।
সেই বৃটিশদের যুগ পেরিয়ে ভারত বর্ষের যুগ পেরিয়ে পাকিস্তান আমল শেষে এখন বাংলাদেশ। নবাব সলিমুল্লাহ'র সেই দেনা কে শোধ করবে, কোথায় করবে প্রশ্ন হয়ত থেকেই যাবে। নবাবদের সমূদয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির (এর মধ্যে দরিয়া ই নুর সহ ১০৯টি অতি মূল্যবান রত্নও আছে) বিপরীতে এই দেনা নেয়া হয়েছিল পূর্ববঙ্গ ও আসাম সরকার এর কাছ হতে। এই দেনা যাই হোক না কেন, এ দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনসেবামূলক বিভিন্ন কাজ, এমনকি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর যে অবদান, এটা বিবেচনায় নিলে কে কার কাছে ঋণী, সেই প্রশ্নও কিন্তু চলে আসে। বৃহত্তর পরিসরে বিবেচনা করলে আমরাই তো নবাব সলিমুল্লাহদের মতো আমাদের মহান পূর্বপুরুষদের কাছে ঋণী।
লেখকঃ বোরহান মাহমুদ
সূত্রঃ প্রথম আলো, কালের কন্ঠ এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের ওয়েব সাইট